মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
দর্শনার্থীর ভীড় ভাটা পড়ছে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। প্রবেশ মূল্য বৃদ্ধি ও পার্কের অভ্যন্তরীণ অনিয়মে আগত পর্যটকের বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। দেশে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত এ পার্কটি ঘুরে সরজমিনে এচিত্র পাওয়া যায়। সরকারি বন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব স্বাক্ষরিত পূর্ব প্রস্তাবিত প্রজ্ঞাপণ মতে ১জুলাই থেকে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রবেশ মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এতে ১৫বছরে উর্ধ দর্শনার্থীদের ৫০টাকা ও ১৫বছরে নিচের জন্য ২০টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ৩০-১০০জন বিশিষ্ট শিক্ষার্থী দলের জন্য ৫০০টাকা ও ১০১-২৫০জনের জন্য ৮০০টাকা কার্যকর করা করা হয়েছে।

এদিকে প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ২০টাকা থেকে ৫০টাকা করায় হতাশাগ্রস্থ আগত পর্যটকের অনেকে। এছাড়াও পার্কের অভ্যন্তরে কর্মকর্তা কর্মচারীর অনিয়ম অবহেলায় নানা সমস্যায় জর্জরিত।

উখিয়া থেকে আগত খালেক, সুমন, রহিম, মহেশখালী থেকে আগত কলিম, রাসেল সহ আরো কয়েক জন দর্শনার্থী জানান সরকারি নির্দেশ মতে প্রবেশ মূল্য ২০টাকা থেকে ৫০টাকা করাটা তাদের জন্য অতিরিক্ত হয়ে পড়েছে। দর্শনার্থীদের অভিযোগ পার্কে সর্বাধিক সংখ্যক খাঁচা পড়ে রয়েছে প্রাণী বিহীন শূন্যতায়। নিয়মমতো খাদ্যের অভাবে বন্দী জন্তুগুলো হাড্ডিসার হয়ে পড়ে রয়েছে। ঘোরাফেরা করে তৃষ্ণার্ত পর্যটকের জন্য নির্মিত বাঘের বেষ্টনীর পাশে পানির কলটি বিকলঙ্গ রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। পার্কের বিভিন্ন খাঁচা ঘুরে লাগোয়া সাইনবোর্ডের সাথে বাস্তবের সাথে কোন মিল পাওয়া যায়নি। দর্শনার্থীদের পার্কের ভেতর খাদ্যদ্রব্য ও পানীয় প্রবেশের নিষেধ থাকার পরও বাঘ্যশালার পাশে রাজিব নামের এক যুবকের নেতৃত্বে পানীয় বিক্রি করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে তার অবহেলায় খাঁচা থেকে বাঘ বেরিয়ে পার্ক জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি সাফারি পার্কের শুরুতে বাঘের হামলায় হারাতে হয়েছিল একাধিক তাজা প্রাণ। পার্কের এ বেহাল অবস্থার জন্য এলাকাবাসী দায়ী করেছেন টানা ১৪ বছর ধরে সাফারী পার্কে কর্মরত থেকে অনিয়ম দূর্নীতি ও অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়া ফরেষ্টার মাজহারুল ইসলাম কে। বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অঞ্চলের অফিস আদেশ নং-৫৪, পি পি নং-২২.০১.০০০০.১০১.০৫.২০১৪.৩১১২ মূলে বন্যপ্রাণী অঞ্চল ঢাকায় বদলী করা হয়। কিন্তু তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এখনো পর্যন্ত সাফারী পার্কে বহালতরবিয়তে চাকুরি করে যাচ্ছেন।

সাফারি পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত  বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নতুন প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই মূল্য বলবৎ থাকবে। বিকলাঙ্গ পানির কলটির ব্যপারে তিনি বলেন কলটিতে অতিসত্বর পানি সাপ্লাইয়ে ব্যবস্থা করা হবে।